DEHLIJ

পীযূষকান্তি বিশ্বাস

দেহলিজের ১৩ প্রকাশিত হলো

পীযূষকান্তি বিশ্বাস


প্রকাশিত হলো, দেহলিজের বাংলাদেশ সংখ্যা । দেহলিজের বহু আলোচিত বাংলাদেশ সংখ্যার প্রথম প্রস্তাব দেন দিল্লির প্রাণতম কবি প্রাণজি বসাক । দেহলিজ, প্রথম সংখ্যা থেকে একটি কমিউনিটি সংখ্যা , যার মালিক একমাত্র কবিসমাজ । যুক্ত হয়েছেন দিল্লির মাটিতে বসে, বাংলা কবিতা দূরহ চর্চার দিকপালেরা । কবি, প্রাণজি বসাক এই পত্রিকার অতিথি সম্পাদক । 


বাংলা, এমন একটি প্রদেশ যা আন্তর্জাতিকে বিভক্ত হয়ে আছে । বাংলা এমন একটি ভাষা যা ভৌগলিকে সম্পৃক্ত হয়ে আছে । বাংলা ভাষা নিজেই একটি কবিতা, যা লিখে কবি নিজেকে বঙ্গভূমির বাদশা বলে নিজেকে দাবী করতে পারেন । এই দূর দিল্লি সেই ভাবে, একটি ভৌগলিক অবস্থান, এই দেহলিজ তার অবারিত দ্বার । পঞ্চপাণ্ডবদের দেশে, পাণ্ডববর্জিত দেশের ঐতিহাসিক অবতারণা । 

সেই, ভাবে বঙ্গভূমিকে কখনো আমি আলাদা করে দেখিনি । আন্তর্জাতিক একটা এবস্ট্র্যাক্ট ব্যাপার । খানিকটা দুর্বোধ্য কবিতার মতো । রক্ত দিয়ে, অক্ষর দিয়ে তাকে সংজ্ঞা দেওয়া যায় না । এই যেমন কাল্পনিক কর্কট ক্রান্তি রেখা আমাদের বুকের উপর দিয়ে চলে গেলো । 

বাংলাদেশে কবিবন্ধুদের বিপুল ভালোবাসা, আমাদের ভরশক্তি দিয়ে সেই কাল্পনিক রেখাটিকে বোঝার চেষ্টা করি । দেশ এখন উত্তাল । ভাষার ডাক, জাতীয়তাবাদের ডাক আগে কখনো আমরা দেখি নাই । কি সময়, কি কাল, কাঁটাতারের দুধারেই ক্ষরণ । কবিতার ব্যাকসিটে বসে আমাদের রাজনৈতিকরণের অভিমুখ স্থির থাকতে দিচ্ছে না । কাল পার করে, দেশের সীমানা বর্ধিত হচ্ছে । কবিতা ছন্দ থেকে আরো গদ্যতর হচ্ছে । ইচ্ছাতর হচ্ছে তার কাব্য প্রতিভা ।

দেহলিজ, এমনিতেই দূর গুল্মলতার দেশ । আরাবল্লীর রুক্ষতায় দগ্ধ, ইতিহাসের রক্তে রঞ্জিত । আমরা এইসবে শতাব্দীর পর শতাব্দী অভ্যস্ত । ক্ষমতা এখন আর টানে না । মনেহয় সুজলা সুফলায় গেয়ে উঠি, আমার সোনার বাংলা । আমার প্রাণের বন্ধুরা ওইপাশে আছে । দিল্লি দূর আছে, কিন্তু অতিদূর নয় । দেহলিজ পার করলেই দিল্লি । এক কদম ওঠানোর অপেক্ষা । 

বাংলা কবিতা, গদ্য, গল্প নিয়ে দিল্লিও থেমে নেই । বাইশ লক্ষ বাঙ্গালির বাস এই দিল্লি এন সি আর । প্রচুর মিনারেলস আর মানুষের ঢল । দেদার বাঙ্গালিদের আনাগোনা । বাংলা পত্রিকা, কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস, নাটকের আকরিক । এখানকার মানুষ চায়, বঙ্গভূমির মূল ভূখণ্ডের সাহিত্য রস আরোহণ করতে । বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান লেখক গোষ্ঠীদের সঙ্গে পরিচিত হতে । একজন বাঙালি, সে প্রতিক্ষণেই বাঙালি । ভৌগলিক আমাদের আলাদা করেছে । আমার কবিতা তাই ভিন্ন । ভিন্নতার পাঠ তাই এই মুহূর্তে খুব প্রাসঙ্গিক । দেহলিজের বাংলাদেশ সংখ্যা আশা করি, সেই আকাঙ্ঘার একটি উতকৃষ্ট পাঠ্য বলে প্রতিপন্ন হবে ।

আমাদের এই সংখ্যার জন্য বিশেষ সম্পাদনার কাজে বাংলাদেশ ও ভারতের দুজন সহ সম্পাদক যোগদান করেছেন। দিল্লির দরবেশ কবি প্রাণজি বসাক তার দীর্ঘদিনের কবিতা চর্চা ও সাহিত্য অভিজ্ঞতা দিয়ে দেহলিজকে সমৃদ্ধ করেছেন । আর বাংলাদেশ থেকে কবি ও মুক্ত চিন্তক মানিক বৈরাগী চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার স্থিত কবিদের সঙ্গে দেহলিজের সংযোগ স্থাপন করে দেওয়াতে এই সংখ্যার শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে । বাংলাদেশ থেকে লেখা সংগ্রহ করে, পয়েন্ট টু পয়েন্ট দেহলিজ সম্পাদনায় সহায়তার করার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি ।

দেহলিজ, দিল্লি থেকে প্রকাশিত একটি বাংলা পত্রিকা । দিল্লির পাঞ্জাবী, হরিয়ানী, রাজস্থানি, গুজরাটি বন্ধুদের সঙ্গে কথা হয় । তাদের ভাষায়, দেহলিজের মতো একটি পত্রিকা নাই । দিল্লি নিজেই একটি মেট্রোপলিটন, তার নিজস্ব চরিত্র বহুবিধ । বিবিধের মাঝে মহান । দেহলিজ সেই চরিত্রে থাকতে চায় । বাংলা ভাষার দূর দিল্লির এই পত্রিকাতে বাংলার মূল ভূখণ্ডের লেখকদের কে স্বাগত জানাই ।


যোগাযোগঃ poet.area@gmail.com

নতুন দিল্লি, ভারত

 

 

     

 

 















3 comments:

  1. এই উদ্যোগের জন্য অভিনন্দন।

    ReplyDelete
  2. মহৎ উদ্যোগ। অনেক শুভেচ্ছা।

    ReplyDelete
  3. সম্পাদকীয় খুব ভালো হয়েছে পিযুষ। বাকি পড়ে জানাবো। খুবই মনোগ্রাহী হবে বোঝাই যাচ্ছে।

    ReplyDelete

FACEBOOK COMMENT