DEHLIJ

সালিম সাবরিন

সমাধিশয়ন

সালিম সাবরিন




কেনো আমি পড়ছি মাহমুদ দারবিশ কিংবা

হিবার কবিতা?


যেখানে সমাধিশয়ন একাকার হয়ে গেছে

ধ্বংসপ্রবণ দ্বিসঙ্গমে জরণের ভেতর মরছে শিশু;

শিশুকামা সংকলিত শিল্প-আমি কেন একগ্র

চিত্তে পবিত্র করে রাখি!


তবে কী নেই জীবনের শেষ অপমান!


যে জীবন বৃষ্টি ভালবাসে; তার মনেও রক্তের ক্ষুধা!

প্রাণের নিঃশ্বাস কেড়ে নেয়!


ক্ষমতার অন্ধকারপুটে-


মানুষ মানুষের রক্ত খায়, মেধা মর্যাদা খায়

বোয়িং, কার্গো, এ্যাটাচি শিকারী কুকুরের মতো

ছুটে যায় মরু সাগর পাহাড় উপত্যকায়_


অথচ রঙিন পর্দায়

আমরা দিনরাত্রি দেখি

জন এফ কেনেডি মেরিলিন মনোরোর হাত ধরে হেটে যায়!


মৌমাছি প্রজাপতি আসে না


কৃত্রিম পারফিউম মাখা রঙিন ফুল


বিপণীতে কোনো মৌমাছি প্রজাপতি আসে না;


তবু ফুল কেনাবেচা বেড়ে যায় প্রতিদিন

সিনেমার নাম তাই প্রেম বড় সেয়ানা*!


ইমুজি প্রেমিকার ঠোটে হাসি ফোটে


সারারাত চলে শুধু প্রেমের বিস্তার


অন্তর্জালিক পারাবারে


প্রথম প্রহরে অস্ট্রিয়ার মনিকার সাথেনা শেষরাতে

কথা হয় ফ্রান্সের ম্যাডোনার সাথে!


প্রজন্মের গন্ধ মাখে না;

প্রেমের মুদ্রানীতি বদলে গেছে; তাই নববধূ

আসে ভিন দেশ থেকে_

মেহেদীহীন হাতে রেশমি চুড়ি রিমঝিম বাজে না।

কৃত্রিম পারফিউমমালা রঙিন ফুল

ফুলশয্যায় ভার্জিন বরবধূ হাসে না


মৌমাছি প্রজাপতি আসে না।


এই তো আবার এসেছে হেমন্তকাল
শোকগ্রস্ত আকাশ পিঙ্গল প্লাজমার মতো
বিভক্ত করেছে নিকট অতীত
যেন পরমপিতার মুখ
যেন শৈশবে হারিয়ে যাওয়া প্রিয় খেলনার মতো
ভালোবাসায় রূপায়িত পবিত্র স্মৃতি
কী শুশ্রুষা দেবে আমাকে
এই হেমন্তের অরণ্য অবকাশে!

মৃত্যুর অন্তর্মুখী এই নরম মধুর ছায়া
বেলাভূমি জুড়ে মাথা নিচু করে
বাতাসের মৌতাত যেভাবে অনেক অনেক পথ
পেরিয়ে নদীগুলো সমুদ্রে মেশে
দূর অতীত গভীরতা জেগে ওঠে
অন্তরতম এক গভীর অন্ধকারে!

পিতা পিতামহ এবং আরো দূর
দূরবর্তী এক মানুষের অন্তর্গত
গূঢ়তম এক অন্ধকার অভ্যন্তরে
হেমন্তকাল সে কী কেবলই
পাতার মর্মরে ঝরে....।



আমি আমার চেয়ে ছোট



আমি আজো পারিনি হতে আমার সমান
বেদী ও শ্রদ্ধার অঞ্জলিতে অভ্যস্ত হতে হতে
হারিয়ে ফেলেছি আমার আমিকে!
ক্রমাগত ছায়া দীর্ঘতর হয় দেহের চেয়ে
কেবলই তোমার নাম প্রশ্নাতীত স্বাধীনতা
আর সব ক্লেদ ও গ্লানির মূহুর্তমোহনায়
বরফজমা শীতের শহরে নৈরাত্মসিদ্ধির প্রয়োজনে
ডাণ্ডা উঁচিয়ে দাঁড়ানো সারি সারি গণতন্ত্রী পুলিশ!

দেশ জুড়ে তোমার সর্বনাম নাট্যের দৃশ্যে
আমি হারিয়ে ফেলি আত্মপরিচয়
দিকে দিকে নির্বীজিকরণের আয়োজনে
নপুংশকের মতো ভরতনাট্যম জলের ভেতর
শুশুক জাগে সহসা আত্মসর্বস্ব মুখ
মুখোশের নেতা!

অবয়বহীন ছায়ায় ঢেকে আড়ষ্ট আমি
আমার ভেতর
নষ্ট হওয়ার কষ্টে ছোট ছোট হতে হতে
ধ্বংসকালীন প্রহরে
বাঁশিহারা নিরো রোম-এর আগুন মেখে
আমি যাই শীতনিদ্রায়, সম্মিলিত স্নায়ুর শহরে ...।


 


No comments

FACEBOOK COMMENT