তাপস চক্রবর্তী
কাছিমের ছানা
তাপস চক্রবর্তী
স্তনগুলো শঙ্খের মতো দুধেআলতায়
ছেয়ে গেছে দেবীপুরাণ...
বেদ-বেদান্তের খসড়া চুড়ান্ত করেছে
গণপতি।
অথচ চড়ুঁইয়ের মিছিল জানিয়ে দিয়েছে
সরস্বতীর কণ্ঠে সাম্যের বারতা।
ঠোঁট কথাগুলো এখনও বাজে শয়নে
স্বপ্নে
যেমন ধনপতির আঁচল জুড়ে জাগে
রাতের আঁধারে।
সমুদ্রমন্থনে বিভোর কাছিমের ছানাগুলো
জেগে আছে
ভন্ড কাকের তপস্যায়।
২
দরোজা
রাতের মতোই, ভীষন কষ্টে বোনা
ঠোঁট কার্পেট
দরোজায় উজ্জ্বল আগুন।
জানি দরোজার ওপাশে আমি
কুকুর শৈলীতে ভাসে বিষণ্ন দুপুর
ক্লান্ত কেউ...
রাস্তার মোড়ে ঝরে কৃষ্ণচূড়া
মাধবীকুঞ্জ সোহাগে
আহ্ মৃত্যুর পর যদি আলো সব জ্বলে উঠে
তখনো মনে কর দরোজার ওপাশে আমি।
৩
নুনভাত
পলাশ রোদ্দুর ছুঁয়ে যাওয়ার আগে
আরও একবার নাচুক নুনভাত
কাঁচা মরিচের কথা
সে যেনো আজ গোলাপের মলয়।
জুঁইফুল ফোঁটা বনে পিঁয়াজের ভাগে
আরও একবার হাসুক নুনভাত
ভাঙা সানকির ব্যথা
সে যেনো আজ গন্ধরাজের প্রলয়।
৪
দ্রবিকরণ সুধা
আজকাল চলে যাবার স্থির চিত্র নিরন্তর আঁকি
তোর বুক কথাতে
তোর ঠোঁট ব্যথাতে।
তোর পাজরের পাঁজি ছুঁয়ে শেষবার বলি-বলেছি
বিকেলের মেঘটা তোর কপালে টিপ করে দেবো
শোকে বিহ্বলতা ছুঁয়ে চোখে দেবো মেঘের অঞ্জন
কাঞ্চন নোলকে বেদনা প্রহর এনে দেবো শেষবার
তারপর আমার ছুটি
ভুলে যাবে সুখের জুটি।
ক্যাকটাসের মতো টবের জীবন তবুও স্বপ্ননামা
চাঁদ সূর্য স্থির নীল নভোতলে তোর দ্রবিকরণ সুধা
মেনে নেবো যাবার সময় তোদের সব অহংকার।
৫
সমাপেয়ৎ
তুমি বলেছিলে নির্বাণ হতে
বুঝলাম এ যেন বোধিবৃক্ষের ধারাপাত
পাখিরও জীবন,
জীবনও গান সব যেন সমাপেয়ৎ
অথচ
অনির্বাণ হতে হতে একদিন আবীর বিকেল
শ্লেট পেন্সিল নিয়ে বাল্যশিক্ষার সন্ধিক্ষণ
ব্যাধের তীরে তোমার কনিষ্টা ছুঁয়ে প্রহর গোনা
কতিপয় শ্রাবণ।
৬
পিদিম
হাতের তালুতে ছোট্ট প্রাণ অনায়াসে কথা বলে।
তুমি হও চাঁদ জোনাকির পিদিম
জ্যোৎস্না নেচে ওঠে উল্লাসে।
জলে ভাসি আমি জলেতে মীন করে খেলা
বেহুলারা ভাসে এখনো মান্দাসে।
তুমি গল্প হয়ে থাকো
ভাঙা বুকের বত্রিশ পাঁজরে।
Post a Comment