DEHLIJ

পলাশ দাশ

সাঁওতালি গাঁও

পলাশ দাশ 




তোমাকে দিতে যদি না পারি...
হীরার অঙ্গুরীয়
স্বর্ণকাতান
কাশ্মীরীয় জামদানী,
অথবা পৃথিবীর কোন
প্রিন্সেসের মতো
পোশাক দামী দামী,
তবু বাংলার সোনালী আঁশে বোনা
আমার তাঁতি হাতের
নিরন্তর শুভেচ্ছা
অপার ভালোবাসা নাও।
বুকের কাছে
জোহান্সবার্গ নয়
গড়তে পারি..
কোন এক সাঁওতালি গাঁও,
ভালোবাসার নামে
শাড়ির আঁচলের মতো
মেঠোপথে
হারাবো তুমি আর আমি ।
স্পেনিস মিউজিক নয়
পাখিরাও নয়
খুব নির্জনে
কখনও গেয়ে উঠবো গান
উদাস সুরে
আমরা দুজনে।


অক্সিজেন



ঘন সবুজ এক ছায়াবৃতের মধ্যে আমি
ভালোবেসে ----
কৃষ্ণছূড়ার রঙে জ্বলে উঠেছিলাম।
আমার ভিতর আগুন ছিলো বলেই তো আমাকে জ্বালাতে পেরেছিলে,
আমার ভিতর প্রাণ ছিলো বলেই তো তীব্র ভাবে সঞ্চারিত করতে পেরেছিলে,
আমি প্রেমহীন নই বলেই তো
হৃদয়ের শুকনো গাছের মরা ডালও
পল্লবিত হয় সহজে।
অক্সিজেন ছাড়া কোন প্রাণীর পক্ষে বাঁচা সম্ভব নয়,
কিন্তু অবাক করে আমি সারাটাজীবন বেঁচেই আছি!
তবে তোমাকে ছাড়া ঠিক আগের মতো জ্বলে উঠতে পারিনা।


তীব্র তৃষ্ণায় 


দূরাকাশও স্রোতস্বিনী নদীর কাছে এসে
যখন পান করে জলধারা, তীব্র তৃষ্ণায়,
মনেহয় এ যেন, রাজা দ্বি রাজ ভিখারি বেশে
অতৃপ্ত হৃদয়ে কোন প্রেম ভিক্ষা চাই!

সে আকাশে মেঘের আর কোন কারুকার্য নেই ;
স্বর্ণ-কচিত তারার মুকুট মূল্যহীন,
সীমাহীন হৃদয় ভালোবেসে মরেছে যেই,
পথ প্রান্তরে,দূর দিগন্তে হয়েছে লীন।

হয়তো চাঁদের মুখে চুনকালি মেখে
নীলাকাশ,ডেকে আনবে অবশ চেতনায় সর্বনাশ,
হয়তো আভিজাত্যের পোশাক খুলে রেখে
স্বগৌরবের বেশবাস ভুলে প্রেমের জন্য হবে ইতিহাস।


মধুরমিলন



দুবাহু বাড়িয়ে মিলাও যদি বুকে বুক ;
আহাঃ প্রাণ জুড়ায়, কী যে অপূর্ব সুখ!
আত্মায় আত্মা মিলে একাত্ম
মিলনেই তো মানুষের পরম সত্ত্ব,
রাস রজনীতে কী যে মোহন মায়ায়
মধুর মিলন অন্তরে অন্তরে,কায়ায় কায়ায়,
ভক্তের মিলন কীর্তনের আসরে;
যুগল আত্মার মিলন--ফুলের বাসরে,
সেই নীল যমুনা জানে
পোড়া বাঁশি কেমন করে টানে,
রাধার আকুতি যেমন মিলনের ক্ষণ,
মানুষও ঠিক মিলন প্রবণ।
প্রাণে প্রাণ মিলে যেখানে একাকার
পরমাত্মার অধিষ্ঠান সেখানেই রূপাধার।



তোমার কাছে পৌঁছুলেই বিষাদ....!



তোমার কালোকেশীর
মুগ্ধতায়..
সেই কোন৷ ফাগুন আবেশে;
শুকনো তুলার মতো
মনটাকে
শোঁ করে....
সেদিন ঘুড়ি বানিয়ে
দিলাম উড়িয়ে।
উড়তে উড়তে
মেঘের কিনারায় পৌঁছুলে
তোমার সেই আহ্লাদী মেঘেরা
দিলো জলে চুবিয়ে!
তখন মুহুর্তেই পড়ে গেলাম
ধপাস করে
মাটির উপরে।
সেই থেকে মাটিতে শুয়ে রোদ পুড়ি বৃষ্টি ভিজি
তবু তোমার জ্যোছনার দিকে ফিরেও তাকাই না।


No comments

FACEBOOK COMMENT