রুমি মল্লিক
প্রার্থনায় তুমি
রুমি মল্লিক
আমার অস্তিত্ব তুমিময়
আমার অন্তরীক্ষ খোঁজে তোমার
ছায়া মূর্তি,
অন্তরের অন্তস্হল পাপিষ্ঠ মোর
ঘোর অমাবস্যার আঁধারে নিন্মে ধাই ।
তবুও চিত্ত বিমোহিত হয়
তোমার অদৃশ্য প্রেমের অন্তরালে ,
নিশিত রাত হাহাকারের বিভীষিকাময়
যন্ত্রণায় ছটফট আমার প্রতিটি প্রহর ।
তোমার প্রেমময় আঁখি দিয়ে
আমার ভালবাসার ভূবন,
আমি গড়তে চাই ।
দিকবিদিক ছুটে চলা পথিক আমি,
তোমার স্পর্শতার অনুভবে বাকরূদ্ধ !
আমি এক দিকভ্রান্ত পথিক।
আমার সর্বাঙ্গে প্রেমের যে শিখা ,
তুমি জাগালে তা আমার অলঙ্কার ,
আশাজাগানিয়া স্বর্গীয় প্রেম
আমায় আলোর ঝিলিক দেখায় !
জাগ্রত থেকো তুমি আমার প্রার্থনায় ,
হে আমার প্রাণেশ্বরী ।
পঞ্চপ্রদীপ
সমাজের চোখে আমার কালি
ঘৃণিত লাঞ্ছিত বঞ্চিত ,
আমার কালির মাতৃজঠরে
নেকড়ে বাঘের থাবা বসিয়ে ,
যে তোমায় দেয় পঞ্চপ্রদীপের আলো ,
তাঁর অস্তিত্বে তুমি দাও
তোমার এিশূলের চিহ্ন ।
মহাপ্রলয়ের কালশক্তি মহাকালীর
ভিতরেই নিঃশেষে হয়ে যায় লীন ।
শূন্যতা
এইতো আছি বেঁচে,
স্বপ্ন পূরণ নাই বা হলো ,
তাতে জলাঙ্গীর ঝর্ণা ধারায়
স্রোতস্বিনী চঞ্চলতা হারায়নি কোন কালে ।
নিজের অস্তিত্বের কাছে
বড্ড বেশি অসহায় ,
বিষাক্ত ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন করে ,
জীবন চেতনার এক মহাসংগ্রাম ।
সময়ের স্রোতে দিনলিপি যাক না কেটে ,
হৃদয়ের গহীন বালুচরে ,
রিক্ততার সুর বাজে মনের দোলাচলে ।
ঈশ্বরের খোঁজে ছুটছি শান্তির আহ্বানে,
মন পবনে যে ঈশ্বর আছে
তাঁকে খোঁজছি কয়জনে ।
শূন্যতার মায়াজালে জড়িয়ে ,
তপ্ত দহনে জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ ,
তবু ও " স্বপ্ন " ভাসে অন্তরীক্ষ জুড়ে।
মনের কামনায় দোদুল্যমান
শিখা চিরন্তন ,
শূন্যতার হাহাকার উঠুক হেসে
রংধনুর পূর্ণ আবেশে ।
ক্রন্দন নারী
নারী তোমার অবয়বে এতো মিষ্টি
চঞ্চলা হরিণী চোখ,
তোমার হাসি পূর্ণিমার চাঁদ ছোঁয়া
স্বচ্ছ আলোর ঝিলিক ।
এতো এতো সুন্দরের উপমায়
তোমায় সাজিয়েছে বিধাতা ।
তবুও কেন? নিশি রাত তোমাকে
দুমড়ে মুচড়ে তোমার অপরুপ,
শোভা মলিন করে দেয় ।
নারী তুমি মানবিক কাজে
মানুষের কাছে ছুটে চলো,
দূর্বার গতিতে ।
মানুষের মাঝে মানুষ রূপী
হায়েনার বসবাস ।
তারা মাংসাশী প্রাণী
তোমায় তাঁরা অন্ধকারে পেলে ,
তোমার মিষ্টি অবয়বে
নেকড়ে বাঘের মতো থাবা বসিয়ে দেয় ।
যে হায়েনা তোমায় ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে ,
সে তোমারই " ভ্রুণে "একটু একটু
করে বেড়ে উঠছে ।
তোমার আমার আপনার সন্তান ।
তাই তো নারী, নিশীথ রাতে
তুমি একা হলেই ,
তোমার হৃদপিণ্ড জুড়ে
ক্রন্দনের শব্দ শুনি ।
নিয়তি
জন্ম জন্মান্তরের ঘূর্ণিপাকে
এসেছি এই ধরায় ।
শৈশব কৈশোরের স্মৃতি গাঁথা
আলোক বর্তিকায় ।
মর্মে মর্মে নানা ছন্দ পতন
মনুষ্য জীবনে,
ছোট বড় শত নদীর
কলকল তান ,
দুঃখ সুখের নীলাভ জলে
ভেসে গেছে শেষে ।
জীবনের বাঁকে বাঁকে
আশা নিয়ে হাঁটে,
দুঃখের মরীচিকা
শ্রান্ত হয় অবশেষে ।
এমনি করে জীবনের
লক্ষ বাঁচে
দূরদূরান্তে স্বপ্নের বুনোহাঁস ভাসে।
স্রষ্টার আমোঘ নিয়মে
বাঁধা পড়েছি অবশেষে ।
সকল মৃত্যুর ব্যথিত প্রাণ
জীবনের সাথে মিশে।
নিয়তির নির্মমতায়
আত্ম সমর্পিত হয়েছি শেষে।
Post a Comment