DEHLIJ

মানিক বৈরাগী

বিক্ষিপ্ত দিওয়ান

মানিক বৈরাগী




ব্যাথার গভীরতায় প্রস্ফুটিত হয় বেদনার হাসিমুখ
##
অস্থিসন্ধির সন্ধিস্থল সঞ্চালন করলেই
দেহকে মনে হয় যুতবদ্ধ ক্যাকটাস
তখন মনে পড়ে পেরকবিদ্ধ যিশু।
#
ফজরের আজান হচ্ছে, উদাসী আকাশের তারারা ক্লান্ত
আর কিছুক্ষণ পর প্রভাতের কিরণ লুকাবে আলোর গহবরে
আমার উর্ঘুম বেদনারাও তারাদের মতো ক্লান্ত।
তবুও মন কিসের আশায় কি এমন নেশায় চঞ্চল
কার বিরহে নিরবে কাঁদে।
#
গরাদ ঘরের দেয়ালে দেয়ালে
কাঠকয়লায় লিখেছিলাম মা হারানোর যন্ত্রণা
কয়েদি গোয়েন্দারা জানিয়ে দিল জমাদারকে
জমাদার খুব মেরেছিল, দিয়েছিল ইলিশ ফাইলে
হাফেজ বেলাল গ্রাম্য রাজনীতির শিকার হয়ে
আমদানি সেলের মেটের দায়িত্ব থাকায় সেলে যেতে হয়নি
বেলাল ডাকাত প্রেমিক পুরুষ উর্দু শায়েরী গায়েন
গভীর রাতে গলা ছেড়ে গাইতেন বাহদুর শাহ জাফর,
মীর ত্বকী মীর, ইকবাল আরও কতো।
বেলাল একদিন সিগারেটের পরিত্যক্ত প্যাকেট, বলপয়েন্ট এনে
বলে লিখো কবি, এখানেই লিখো
মান্টোর ভাবার্থ কালাম।
ছেড়া সিগারেটের প্যাকেটের সেইসব পবিত্র বেদনার কালাম
জেল মুক্তির দিনে চেকিং কালে সব কেড়ে নিল
ত্বকীর ইলহাম।
জেলে আমাদের চিত্তচর্চার কোন অধিকার ছিল না
আমরা ছিলাম ছিটেফোঁটা কর্মী
তাই জেলে লেখা কালামগুলো বইয়ের মোড়কের বদলে
বেলাল আর আমার যৌথ তেলোয়াতে উড়িয়ে দিয়ে ছিলাম ইতারে।।
খুব গভীর রাতে আর সুবেহ সাদেকে ইলহাম আসে
ফয়েজ আহমদ ফয়েজের তরফ থেকে
সেইসব কালামে ইলহাম বেহেশতবাসী মায়ের কবরে
তেলোয়াত করি অশ্রুকাতর নয়নে।
#
উপদ্রুত রাজনীতির কালে দেশমাতৃকার টানে
জীবন সঁপেছিলাম সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতার আশে।
আত্মসুখ ত্যাগে যাদের তরে বিপন্ন করেছি জীবন
মরণ সায়াহ্নে এসে বুঝিলাম সুখের সাম্য নয়
ভুষিখেয়ে খুশিতেই উপনিবেশিক দাসত্বই পণ ।
##


এসো চৌমুহনী মোড়ে


চলো সখি বিরহ উদযাপন করি বেদনা তলে।
যন্ত্রনার রস পান করি হাড়া কাঁপানো শীতে
জুম ঘরে ওম নি পৌরানিক মহুয়া পানে
আমাদের সবুজ হৃদয়ের হাহাকার ধ্বনি হোক
শ্লোগানে শ্লোগানে রণধ্বণি হোক ব্যার্থতার
চৌমুহনী মোড়ে আমাদের বিরহ উৎসবে
তুমি আসবে তো?
##
কবির রোজনামচা
ফুলমঞ্জরীর মোহ টানে অলিরা আসে
শব্দমঞ্জরীর মোহন মায়ায়
ঘুষখোর আমলা,লম্পট -ধান্দাবাজ, দালাল, সময়হীন উচ্চাকাঙ্ক্ষী ব্যবসায়ী, ডিগবাজ
রাজনীতিক,চরিত্রহীন জনপ্রতিনিধির
মানসিক দৈহিক পেরেশানি নিয়ে প্রশান্তির আশায়

শব্দমঞ্জরিত নানান ব্যঞ্জনমাখা বাক্যের মোহে
কোন না কোন রমনীও মাঝে মাঝে আসে
কবির কাছে।
কবিতার কিছু কিছু ম্যাজিক লাইন স্বপ্নবিলাসীকে স্বপ্নাচ্ছন্ন করে
ঘোরগ্রস্তের নেশায় অলির মতো শব্দমঞ্জরিত ব্যঞ্জনামুগ্ধ কবিতার খাতায় এসে বসে
কবি কে পোড়ায়, ঘোর কেটে গেলে রমনীরা ফিরে যায় সংসারের মায়ায়
পোড়াদগ্ধ ক্ষত নিয়ে সিগারেটের খালি প্যাকেটে
লিখে রাখে হৃদয়ক্ষত রোজনামচা।
##

No comments

FACEBOOK COMMENT