গৌরাঙ্গ মোহান্ত
গৌরাঙ্গ মোহান্ত
প্রভাত চৌধুরীর একাঙ্গী ফুল
নোটবইয়ের ১১১ নম্বর পৃষ্ঠায় ঢুকে যাচ্ছে একাঙ্গী ফুল; অনুভূমিক তানপুরার স্বপ্ন মেখে যে আরবীয় ঘোড়া ছুটে যাচ্ছে তার খুরশব্দে ভেঙে পড়ছে অরণ্যবৃত্ত, চিত্রকোটের জলতরঙ্গসুরে অভ্রান্ত লক্ষ্যের দিকে উড়ে যাচ্ছে রাজফিঙে, তার শিসে কেঁপে ওঠে বাইশ শতকের সমস্ত সরোবর; পদ্মের রাইজোমরন্ধ্রে সঞ্চিত হচ্ছে বিনয়শ্রী ও নাসের হোসেনের নিশ্বাস, ধ্বনিত হচ্ছে নতুন চর্যার কামোদ।
ব্যাঙাবতার
(ঋগ্বেদের ৭ম মণ্ডলের ১০৩ সংখ্যক সূক্ত অনুসরণে)
বর্ষার জয়বন্তী কদম্বিত হবার পর ব্যাঙাবতার অভিষিক্ত হয়। তার হরিদ্রাভ দীপ্তি পদ্মপাতাকে স্বর্ণথালায় রূপান্তরিত করে। অনুগামীদের কোরাসে সরোবর নৃত্যপর হলে ভেকবালিকা শৃঙ্গারলজ্জা ভুলে যায় আর বৎসলা গাভি শিখে নেয় হাম্বাধ্বনি। প্লবগপতি সঙ্গীতের আদি রূপকার; একমাত্র প্লবগসঙ্গীত মেঘের সমস্ত অণুসত্তায় সঞ্চারিত হয়। পৃথিবীর শস্যরূপময়তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যাঙাবতার স্মরণাতীত কাল থেকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তার কাছে প্রার্থনা, প্রত্যেক গৃহে বলদ আর গাভির সংখ্যা বৃদ্ধি পাক, মোহর আর মাণিক্যে পূর্ণ হোক মানুষের মুদ্রাধার, ক্ল্যারিনেট সুরে উড়ে যাক মারির লেআউটভস্ম।
শহরে উল্কামুখ
আমাদের ব্রিফকেসে অনড় বিন্দুসমষ্টি সঞ্চিত হচ্ছে; রেখা বা বৃত্ত অঙ্কনে সেগুলো অকার্যকর। আমাদের নিশ্বাস ধুতুরা ফলের ব্যাস নির্ণয়ে বিক্ষত। সমুদ্রীয় প্রত্নবিদ ক্যাম্বে উপসাগর থেকে দ্বারকার যে ভগ্নাবশেষ সংগ্রহ করেছেন তা কোনো সভ্যতার অচিরস্থায়িত্ব প্রমাণ করবার জন্যে যথেষ্ট। দ্বারকার খণ্ডিত প্রাচীর, ভাস্কর্য, শঙ্খ-স্মারক, পুঁতি প্রাচীন মানুষের পূর্ণ প্রজ্ঞা প্রকাশ করে না। অনুজীবের আক্রমণে অবলুপ্ত সভ্যতার নিদর্শন পরীক্ষা করেও ভবিষ্যতে কোনো প্রত্নবিদ জীবনের বিপর্যয়ের যথার্থ স্বরূপ উদ্ঘাটন করতে পারবেন না। কেননা মারিকালে শহরের অলিগলিতে দৃশ্যমান হয়েছিলো একদল উল্কামুখ যাদের রক্তাভ খড়্গে গ্রথিত ছিলো মানুষের ফুসফুস।
পড়ে ভালো লাগলো গৌরাঙ্গদা।
ReplyDelete