তপংকর চক্রবর্তী
নদীই উপমা হয়
তপংকর চক্রবর্তী
ভাঙা-গড়া নদীর অভ্যাস।
ভাঙতে ভাঙতে নদী সভ্যতা বিদ্বেষী
নদী জানে ছিন্নমূল মানুষের কষ্টের কারণ
নিজস্ব নিয়ম মেনে সে ছুটেছে সাগর-সঙ্গমে
কিছুটা নাচের ছন্দে
খানিকটা ঋজু ভঙ্গিমায়।
একপাড় ভেঙেচুরে অন্যপাড় পললে সাজিয়ে,
নদীগর্ভে হারিয়েছে মানুষের কত ইতিহাস।
এই নদী অপরূপ জোয়ারে ভাটায়
বর্ষায় প্রমত্তা নদী শীতে তার দেখি অন্যরূপ
যারা নদী দেখে নাই
কি করে জানবে তারা নদীর স্বরূপ?
এই নদী তীর থেকে মানুষের সভ্যতা সূচনা
নীল নদ, টাইগ্রিস
ইউফ্রেটিস অথবা সিন্ধু নদী তীরে
মানুষের যে সভ্যতা উঠেছিল গড়ে
সে সব বিলুপ্ত আজ
নদীই রেখেছে শুধু সেই স্মৃতি ধরে
পুরনো সভ্যতা সব মরে গেলে পর
এখন নতুন করে নদী তীরে মানুষরা গড়েছে শহর
নদী জানে বয়ে চলা কাল নিরবধি
নদীই উপমা হয়, জীবনের মানে খুঁজি যদি।
দ্বন্দ্ব
তোমার এলানো চুলের নিবিড়ে
যদি রেখে দেই গোলাপ গন্ধ
তবুও কি তুমি ও মুখ ফেরাবে
নারী, তুমি আজো এমনি অন্ধ!
এই যে আমার কাটে না দিবস,
যায় না রজনী, সকাল-সন্ধ্যা
দেখে তবু তুমি দ্যাখো না তাহারে
মিছে মেতে থাকো সুরের বাহারে
যার ধ্যানে তুমি হয়েছ বিবশ
কই সে সুরের অলকানন্দা?
তোমাকে বোঝার বাসনা ছেড়েছি
বাসনা ছেড়েই বুঝতে পেরেছি
তোমার বুকের সাজানো বাগানে
ব্যাকুল করানো বকুল গন্ধ
চিত্তে তোমার সুরের আরতি
আর তুমি যেন নীল প্রজাপতি
অথচ বোঝ না ভালোবাসা মানে
নবজীবনের চলার ছন্দ!
বুঝতে পেরেছি কপাল মন্দ
চোখ থাকতেও তুমি যে অন্ধ
জীবনের চিরাচরিত দ্বন্দ্ব
ভালোবাসবার দুয়ার বন্ধ।
কি লাভ তোমার চুলের নিবিড়ে
যদি রাখি আমি গোলাপ গন্ধ?
Post a Comment